জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকছে কিনা, এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল ডাকা হলেও হচ্ছে না সিদ্ধান্ত। পরপর দুইবার বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল পেছানোয় সিদ্ধান্ত নিতে টালবাহানা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২৪ জানুয়ারির একাডেমিক কাউন্সিলের একটি এজেন্ডা ছিল গুচ্ছ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেই একাডেমিক কাউন্সিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি এবং উপাচার্য পরবর্তীতে বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিলে এ সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানান। এরপর ২২ ফেব্রুয়ারি বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল থাকলেও সেটি পিছিয়ে ২৭ তারিখে নেয়া হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে ২৭ তারিখেরও একাডেমিক কাউন্সিলও স্থগিত করা হয়।
একাধিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে শিক্ষক নেতাদের একটি বৈঠক থাকায় বিশেষ কাউন্সিল মিটিং ২৭ তারিখে পেছানো হয়েছিল।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানা যায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের উপাচার্য, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভা নির্ধারিত হওয়ায় ২৭ তারিখ অনুষ্ঠিতব্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল-এর ৬৪তম সভা (বিশেষ সভা) স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষক নেতারা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় সভা হতেই পারে। কিন্তু এর জন্যে তো অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ থাকতে পারে না। উপাচার্য উপস্থিত থাকতে না পারলে তিনি কোনো ডিনকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে বিশেষ একাডেমিক সভা করতে পারতেন।,
গুচ্ছ পদ্ধতি নিয়ে একাধিক শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি বিভাগের একাডেমিক কমিটি তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে উপাচার্য বরাবর লিখিত পাঠিয়েছে। আর তাতে স্পষ্ট করে সকল একাডেমিক কমিটি বলেছেন তারা গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয় পদ্ধতিতে থাকতে ইচ্ছুক নয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমান বলেন, ‘গুচ্ছ নিয়ে আলোচনার কথা ছিল ২৪ জানুয়ারির একাডেমিক কাউন্সিলে। কিন্তু উপাচার্য মহোদয় এ নিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি বিশেষ কাউন্সিল ডাকেন। সেটাও স্থগিত করে ২৭ ফেব্রুয়ারি ডাকা হয়। এবারও স্থগিত করা হয়েছে। উপাচার্য বাইরে সভা করতে গেলে, তিনি চাইলেই একজন ডিনকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে একাডেমিক কাউন্সিল করতে পারেন। কিন্তু তা না করে বারবার স্থগিত করা হচ্ছে। এভাবে কালক্ষেপণ করে গড়িমসি করা হচ্ছে।’
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের সঙ্গে সাধারণ সভায় সকল শিক্ষক মতামত দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে থাকবে না। আগামীকাল শিক্ষামন্ত্রী মতবিনিময় সভায় আমাদের ডেকেছেন, আমরা সেখানে সকল শিক্ষকদের মত তুলে ধরবো।’
শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধে শিক্ষক সমিতি তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবে কিনা এবিষয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষক সমিতি সকল শিক্ষকদের মত নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই এ মতামত পরিবর্তন হবে না। তবে শিক্ষামন্ত্রী অনুরোধ করলেও আমরা শিক্ষকদের নিয়ে আবার বসে সিদ্ধান্ত নিবো।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হকের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।,
এদিকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান রক্ষা ও স্বকীয়তা ফিরিয়ে আনতে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র ভর্তি পরীক্ষা ফিরিয়ে আনার দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছেন।,
Leave a Reply