মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৭ অপরাহ্ন

এই মাত্র পাওয়া

দুর্গাপুরে মুখে কসটেপ পেঁচিয়ে, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে জলন্ত কয়েলের ছ্যাঁকা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪
  • ৯৬ পঠিত


দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে ঘরের ভিতর আটকে রেখে মুখে কসটেপ পেঁচিয়ে জলন্ত কয়েলের আগুন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা ও মারধর করার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ভুক্তভোগী ওই নারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম মিনা আক্তার (২৩)। সে দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের ভাদুয়া গ্রামের মৃত চাঁন মিয়া ফরাজীর মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামীর নাম ইব্রাহীম মিয়া (২৮)। পার্শ্ববর্তী ধোবাউড়া উপজেলার বহরভিটা গ্রামের রহমত আলীর ছেলে।

মিনা আক্তারের স্বজনরা জানান, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী ছিল মিনা। ভাদুয়া গ্রামের জামে মসজিদে ইমামতি করতেন ইব্রাহীম মিয়া। মসজিদের কাছাকাছি মিনার বাড়ি হওয়ায় প্রায় সময়ই নানা অযুহাতে তাদের বাড়িতে আসতো সে। এক পযার্য়ে মিনার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ইব্রাহীম। প্রেমের সম্পর্ক এলাকায় জানাজানি হলে উভয় পক্ষের সম্মতিতে দেড় বছর পূর্বে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা।

ভুক্তভোগী মিনা আক্তার জানান, বিয়ের পর তাঁকে নিয়ে কুমিল্লা চলে যান ইব্রাহীম। সেখানে গিয়ে ৬ দিনের মাথায় তাঁর বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অপারগতার এক পর্যায়ে নরসিংদীতে গার্মেন্টে চাকরি নেন মিনা আক্তার। ওই সময় মিনার গর্ভে সন্তান আসায় ওই চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। চাকরি ছেড়ে দেওয়ায় যেন কাল হয়ে দাঁড়ালো মিনার। এরপর থেকে তার উপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। গত ১০ মে শুক্রবার সকালে ঘরে আটকে রেখে মিনার দুই হাত ও পা বেঁধে, মুখে কসটেপ পেঁছিয়ে মারধর ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জলন্ত কয়েলের আগুন দিয়ে ছ্যাঁকা দেয় ইব্রাহিম। পরবর্তীতে ১৭ মে শুক্রবার ইব্রাহিমের অগোচরে এক প্রতিবেশীর সহযোগিতায় নরসিংধী থেকে পালিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ভাদুয়া বাবার বাড়িতে চলে আসে মিনা। পরবর্তিতে গতকাল বুধবার তাঁর পরিবারের লোকজন তাকে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

মিনা আরো বলেন, আমার গর্ভে সন্তান আসায় কাজ ছেড়ে দেই আমি। এর পর থেকেই আমার উপর চরম নির্যাতন শুরু হয়। আমাকে প্রানে মেরে ফেলার কথাও বলেছে সে। এই কথা প্রান বাঁচাতে আমি পালিয়ে আসি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাম্মৎ জেবুন্নেসা বলেন, ওই নারী দুইদিন যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের ক্ষত আছে। বর্তমানে সে তিন মাসের অন্ত:সত্বা।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব জানান, এ ঘটনায় এখনো কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 digantabangla24.com