দিগন্ত ডেক্স : রাজধানীর কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসায় হেনা (১০) নামে এক গৃহকর্মীকে হত্যার অভিযোগে পলাতক গৃহকর্ত্রী সাথী পারভিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, যশোর জেলা এলাকা থেকে পলাতক গৃহকর্মী সাথী পারভিন ডলিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাথীকে গ্রেপ্তারের পর যশোর থেকে পুলিশের একটি টিম ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ আগস্ট কলাবাগান সেন্ট্রাল রোডের একটি বাসা থেকে শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যার পর পালিয়ে যান সাথী আক্তার। এ ঘটনায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ। সাথী ওই ভবনের অন্যান্য বাসিন্দাদের কাছে ‘ডাইনি’ নামে পরিচিত।
কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, শিশুটির আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো একদিন গৃহকর্ত্রী সাথী ময়মনসিংহ গিয়েছিলেন সমাজ সেবামূলক কোনো কাজে। সেখানে তার সন্তানকে দেখভালের জন্য কাজের মেয়ের খোঁজ করেন। পরিচিতজনদের এ কথা বললে তারা শিশু গৃহকর্মী হেনাকে নিয়ে আসেন। পরে হেনাকে সেন্ট্রাল রোডের দ্বিতীয় তলায় বাসায় নিয়ে আসেন গৃহকর্ত্রী সাথী। কথা ছিল, এতিম শিশুকে যেন তিনি নিজের সন্তানের মত দেখেন।
ওসি আরও জানান, হেনার পরিবার একেবারেই গরিব। লাশ বহন ও দাফনের অর্থও নেই তাদের। অনেকেই আর্থিক সহযোগিতা করেছে। সেগুলো লাশ বহন দাফনসহ অন্যান্য খরচের জন্য হেনার পরিবারকে দেওয়া হয়েছে।
নিহত হেনার সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করেছে, শিশুটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। এছাড়া শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে।
মর্গ সূত্রে জানা যায়, শিশুটির শরীরে অসংখ্য পুরাতন আঘাতে চিহ্ন দেখা গেছে। এ আঘাতগুলো নির্যাতনের কারণে।
শিশুটিকে নিয়মিতই নির্যাতন করতেন সাথী, এমনটা জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তবে সাথীকে সবাই এড়িয়ে চলতো বলে জানান সেন্ট্রাল রোডের ওই বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা মফিজুর রহমান।
তিনি জানান, সাথী পারভীনের সঙ্গে ফ্ল্যাটের কারোর সম্পর্ক ছিল না। কারণ তার উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরা ও মুখের ভাষা এতটাই খারাপ সবাই তাকে এড়িয়ে চলতো।
একই রকম তথ্য দিয়েছেন সাথীর সাবেক স্বামী রাহাত। তিনি পুলিশকে জানান, উচ্ছৃঙ্খল চলাফেরাসহ নানা কারণে সাথী পারভিনকে তিনি তালাক দিয়েছেন। একটি মামলা চলমান থাকায় সাথী তার ওই ফ্ল্যাটটি দখল করে একাই থাকতেন।
গত ২৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টার আগে কোনো এক সময় শিশু গৃহকর্মী হেনাকে হত্যার পর সাথী পারভিন ডলি তার নিজের সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান। পরদিন শনিবার সেন্ট্রাল রোডের বাসায় গিয়ে মিস্ত্রির মাধ্যমে দরজার তালা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে ওই শিশু গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
Leave a Reply