শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:২৯ অপরাহ্ন

এই মাত্র পাওয়া

টাকা না দিলো, ভাতার কার্ড দেয় না মেম্বার

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট : সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩
  • ২৫২ পঠিত

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা সহ অন্যান্য ভাতার কার্ড প্রদানে কমিশন না দিলে মিলছেনা ওই কার্ড। কখনো অগ্রিম আবার কখনো নগদ টাকা দেয়ার শর্তে করিয়ে দেন ভাতার কার্ড। এভাবেই জনগনের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার ৩নং চন্ডিগড় ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মো. সিরাজুল ইসলাম তোতা মিয়ার বিরুদ্ধে। এসব বিষয় উল্লেখ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গণস্বাক্ষরের এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ওয়ার্ডের ভুক্তভোগীরা।

জানা গেছে, ৩নং চন্ডিগড় ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডে মেম্বার পদে টানা দুই বার নির্বাচনে পরাজিত হয়ে তৃতীয় বার নির্বাচনে অংশ নিলে বিজয়ী হন তিনি। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই অনিয়ম, দুর্নীতির নানা কর্মকা-ে অতিষ্ঠ হচ্ছে সাধারণ জনগণ। সরকারি বিভিন্ন ভাতার কার্ড করে দিতে জনগণের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। তার চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারলে ভাতা পাওয়ার উপযোগী হওয়া সত্ত্বেও মেলে না ভাতার কার্ড। প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বাদ দিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্যদের ভাতার কার্ড দেয়ায় প্রকৃত সুবিধাভোগীরা সরকারের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

মেলাডহর গ্রামের ডালিয়া বেগম, পারভীন আক্তার, ফাতেমা খাতুন, রাবিয়া খাতুনসহ আরো অনেকের কাছ থেকেই চালের কার্ড, বয়স্কভাতার কার্ড করিয়ে দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি অগ্রিম ১ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়াও গভীর নলকূপ (সাবমার্সেবল) পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে।

ওই গ্রামের গৃহবধূ মৌসুমি আক্তার বলেন, আমি গর্ভবতী ভাতার কার্ড করার জন্য মেম্বারের কাছে গেলে, ওনাকে কিছু টাকা দেওয়া লাগবে বলে জানায়। পরে ভাতার কার্ড বাবদ ২ হাজার ৫০০ টাকা দিয়েছি। কিন্তু আমার কার্ড একনো হয়নি।

ফাতেমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে দীর্ঘ ধরে বিছানায় পড়ে আছে। স্বামীর বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য মেম্বারের কাছে গেলে তিনি টাকা দাবী করেন। গরিব মানুষ ভাবলাম কিছু টাকা দিয়েও যদি কার্ড পাই, অসুবিধা কী। পরে ঋণ করে ১ হাজার টাকা দিয়েছি। পরবর্তীতে আবারও ৩০০ টাকা নেয়ার পরেও ১ বছর হয়ে গেছে এখনো কার্ড পাইনি।

ধানশিরা গ্রামের বাসিন্দা বিলকিস বেগম বলেন, চালের কার্ডের জন্য মেম্বারের কাছে গেলে তিনি বললেন কার্ড করে দিবেন কিন্তু ৪ হাজার টাকা অগ্রিম দিতে হবে। তারপর আমি ১৫০০ টাকা ওনাকে দিয়েছি কিন্তু নেন নাই। ৪ হাজার টাকাই লাগবে। পরে আর আমার চালের কার্ডটিও করে দেননি। উনার কাছে কেউ স্বাক্ষরের জন্য গেলেও টাকা দিতে হয়।

এ সব বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম তোতা মিয়া মুঠোফোনে বলেন, “আমি কারো কাছ থেকে কোনো টাকা-পয়সা নেইনি। আনীত অভিযোগ গুলোর কোন প্রমান নাই। নলকূপের টাকা ওই লোকরাই আমায় দিয়েছেন, যদি নলকুপ দিতে না পারি তাহলে তাদের টাকা ফিরত দিয়াম।”

৩নং চন্ডিগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদুল হক (আলম) সরকার বলেন, পরিষদের প্রতিটি মিটিং এ মেম্বারদের এ সকল বিষয়ে বারংবার সর্তক করা হয়। ওই সদস্যের ব্যপারে আমি এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, টাকার বিনিময়ে ভাতার কার্ড বিতরণ এ বিষয়টি সত্যিই দুঃকজনক। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 digantabangla24.com