দিগন্ত ডেক্স : আট বছরের সন্তান আরিফ বিল্লাহকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বাবার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ধলবাড়িয়া মাঠপাড়ার আশ্রয়ণ প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা হত্যাকারী ইয়াছিন আলীকে ইতোমধ্যে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
ধলবাড়িয়া মাঠপাড়ার আসমা বেগম জানান, সদর উপজেলার চুপড়িয়া গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে ইয়াছিন আলীর সঙ্গে তার ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। তিন বছর আগে ধলবাড়িয়া মাঠপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পান তিনি। এর পর থেকে একমাত্র সন্তান আরিফ বিল্লাহসহ সপরিবারে তারা সেখানে বসবাস করে আসছেন। আরিফ বিল্লাহ ধলবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করে।
রোকেয়া খাতুন আরও বলেন, তার স্বামী মাদকাসক্ত ও অস্ত্র মামলার আসামি। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তার বিরোধ লেগেই থাকত। গত মঙ্গলবার স্বামী তাকে মারপিট করলে আরিফকে নিয়ে তিনি তার নানা ধুলিহর গ্রামের ইজ্জত আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেন। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নানার বাড়ি থেকে আরিফকে নিয়ে চলে আসে ইয়াছিন। পরে আর মোবাইলে যোগাযোগ হয়নি।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে মোবাইল ফোনে খবর পান যে তাদের বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে। তাৎক্ষণিক স্বজনদের নিয়ে বাড়িতে এসে তিনি জানতে পারেন যে তার ছেলেকে ঘরের মধ্যে হত্যা করে দরজা লাগিয়ে বাইরে থেকে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে তার স্বামী। যেহেতু আগুন লাগানোর পর ওই বাচ্চার কোনো কান্না বা চিৎকার কেউ শুনতে পায়নি তাই ধারণা করা হচ্ছে, তাকে হত্যার পর লাশ ঘরের মধ্যে রেখে দরজায় শিকল তুলে দিয়ে বাইরে থেকে আগুন দেওয়া হয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন তার স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
আরিফ বিল্লাহর দাদি মলুদা খাতুন জানান, ইয়াছিন তার ছেলেকে হত্যা করে ঘরে আগুন লাগিয়ে তার মামার বাড়ি আগরদাঁড়িতে যায়। সেখানে সে তার ছোট ভাই মামুনের পোষা ময়না পাখিটি ডানা ছিঁড়ে মেরে ফেলে। ভাই মামুনকে লাঠি দিয়ে পেটায় ইয়াছিন। একপর্যায়ে তার মামা তুহিন ও খালা শেফালী ছুটে এলে তাদেরও মারপিট করে ইয়াছিন। পরে তুহিনের ছেলে আকাশ এসে ইয়াছিনকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সে পড়ে যায়। পরে ইয়াছিনকে শেকল দিয়ে বেঁধে রেখে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, ঘাতক ইয়াছিন আলীকে আটক করা হয়েছে। ছেলেটির দেহ পুড়ে কঙ্কাল হয়ে গেছে। চেনা যাচ্ছে না। মৃত্যুর কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Leave a Reply