দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নে রোপনকৃত ১৭হাজার ২শ ৮০ হেক্টর জমিতে রোপনকৃত বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কৃষকরাগণ। জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে নানা দুঃচিন্তায় আছেন তারা। ধান গাছের পাতায় ডিম্বাক্রিতির দাগ পড়ে পাতা, কান্ড ও শীষ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেছে। এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ফলে ধান গাছের গোড়া পচে শীষ ভেঙে পড়ে এবং ধান গুলোতে চিটা দেখা দিয়েছে।
এনিয়ে শনিবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখাগেছে, বিস্তীর্ন জমির ধান গাছের ৫০% থোড় (শীষ) বেরিয়ে যাওয়ার ফলে অধিকাংশ শিষে নেকব্লাস্ট রোগে ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। শীষের নিচের অংশে কালো হয়ে পচে গেছে। সেই সাথে উপরের শীষ শুকিয়ে নীচের শীষ গুলো চিটায় রুপ নিচ্ছে। দুর্গাপুর পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নের বিভিন্ন জমি গুলোতে দুর থেকে দেখে মনে হচ্ছে ধান পেকে গেছে। কাছে গিয়ে ধানের শীষ হাতে নিয়ে দেখাগেছে, ধানের ছড়া গুলোর মাঝে রয়েছে চিটা।
দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের ভোক্তভুগি কৃষক হানিফ মিয়া, গাঁওয়াকন্দিয়া ইউনিয়নের হযরত বেপারী, কুল্লাগড়া ইউনিয়নের প্রাঞ্জল মারাক বলেন, খাদ্যের বড় একটি অংশ আসে বোরো ধান থেকে। গেলো দু‘বছর আমাদের ২টি বোরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। বড় আশা নিয়া এবারও ২৮ব্রি ধান আবাদ করেছি। এবারও যদি ফসল জমির বোরো ফসল নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে অত্র উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।
এ বিষয় নিয়ে, কীটনাশক ব্যবসায়ি রায় স্টোরের স্বত্বাধিকারী শ্যামল চন্দ্র রায় বলেন, নেকব্লাস্ট রোগের জন্য কৃষি অফিস থেকে সেতু পেস্টিসাইড লিমিটেডের পাইরাপ্লোরোস্টোবিন ১০% (সিএফ ফরমোলেশন) ‘‘সেলটিমা’’ নামক ঔষধ ব্যবহার করার পরমর্শ দেয়া হচ্ছে। ঔষধ ব্যবহারের মাধ্যমে নেকব্লাস্ট নির্মল করতে না পারলে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, ধান খেতে অতিরিক্ত ইউরিয়া ব্যবহারের ফলে এই রোগ দেখা দেয়। ব্লাস্ট রোগ নিয়ন্ত্রনে আমাদের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাগন এ বিষয়ে লিফলেট বিতরণ সহ মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছে সেই সাথে ‘‘সেলটিমা’’ নামক ঔষধ ব্যবহার করার পরামর্শও দিচ্ছি কৃষকদের। যতটুকু জমিতে ছত্রাক আক্রান্ত হয়েছে এতে ভয়ের কিছু নাই, আশা করছি রিকোভার করতে পারবো।
Leave a Reply