অহিদুর রহমান, নেত্রকোনা থেকে : বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক এর আয়োজনে জলবায়ু ন্যায্যতা ও খাদ্যসার্বভৌমত্ব পরিস্থিতির উপর অনলাইন ও নাগারিক সাংবাদিক এর সদস্যদেরকে নিয়ে দুইদিন (২৭-২৮ মার্চ) ব্যাপি এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা সম্পন্ন হয়েছে। বারসিক রামেশ্বরপুর রিসোর্স সেন্টারে এ কর্মশালা সম্পন্ন হয়।
কৃষিপ্রতিবেশ, আর্থিক সহযোগিতায় গ্লোবাল গ্রীন গ্রান্ডস ফান্ড ইউকে। নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া, আটপাড়া, নেত্রকোনা সদর, মোহনগঞ্জ, কলমাকান্দা, পূর্বধলা, দুর্গাপুর ও মদন উপজেলার ২৫ জন সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সহায়কের ভূমিকা পালন করেন সৈয়দ আলী বিশ্বাস, পরিচালক, প্রাণবৈচিত্র্য ও খাদ্যনিরাপত্তা বিভাগ। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জনাব অহিদুর রহমান, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী, বারসিক নেত্রকোনা।
পরিচয় পর্বে সাংবাদিকরা নিজ এলাকার কৃষি, পরিবেশ, ফসলবৈচিত্র্য, নদী, হাওর, জলাধার, গাছ, মাছ, প্রাণিসম্পদ, মাটি, পানি, বায়ু, বর্তমান পরিস্থিতি এবং অতীতের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। সৈয়দ আলী বিশ্বাস কৃষি প্রতিবেশবিদ্যা, জলবায়ূ ন্যায্যতা ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব বিষয়ে আলোচনার পর অংশ্রহণকারীরা নেত্রকোনা অঞ্চলের কৃষিপ্রতিবেশ অবক্ষয়ের বিষয়টি তুলে ধরেন।
আলোচনায় ‘এগ্রোইকোলজি’ বা কৃষি প্রতিবেশবিদ্যা হলো বিজ্ঞান, নীতি-দর্শন, অনুশীলন-চর্চা এবং জন আন্দোলনের বিষয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে নেত্রকোনা অঞ্চলে দুর্যোগ, কৃষিফসলের ক্ষেত্রে সংকট, বৈচিত্র্যতা কমে যাওয়াসহ প্রকৃতিগত সামগ্রিক এসব সামগ্রিক বিষয়গুলো উঠে আসে। টেকসই খাদ্যব্যবস্থা রূপান্তরের জন্য উপযোগী কাঠামোকে বুঝতে সহায়তা করে কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা। কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা সামাজিক ও রাজনৈতিক মাত্রাগুলোকে সন্নিবেশন করে আঞ্চলিক খাদ্যব্যবস্থার সুশাসনকে নিশ্চিত করে, যা খাদ্য সার্বভৌমত্বের আন্দোলনকে বেগবান করার কথা আলোচনায় উঠে আসে।
প্রান্তিক কৃষকদের অধিকার সুরক্ষা, কৃষকের স্থানীয় বীজসম্পদ সংরক্ষণ, কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা চর্চা, জৈবকৃষি চর্চা, ভূ-গর্ভের পানির ব্যবহার কমিয়ে আনা, ফসলবৈচিত্র্য বৃদ্ধি করা, জৈবকৃষি চর্চাকে সম্প্রসারণ, কৃষকের মাঝে সচেতনতা তৈরী, জলাধার গুলোকে খনন ও সুরক্ষা করা, জনআন্দোলন শুরু করা, মাটিকে ভালো রাখার জন্য, জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত করা।
সংবাদকর্মীরা নিজ নিজ এলাকার পরিবেশ প্রকৃতি, কৃষি, জলাভূমি, বিল, গাছ, মাছ, মাটি, পানি ও বায়ুর সংকটগুলো তুলে ধরে এ বিষয়গুলো সমাধান করলে ও চর্চা করলে, এলাকার কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা সুরক্ষিত হবে, বাস্তুতন্ত্র ঠিক থাকবে এবং কৃষকের খাদ্যসার্বভৌমত্বও নিশ্চিত হবে।
Leave a Reply