রনি খান, নেত্রকোনা থেকে : আসন্ন কপ-২৮ কে সামনে রেখে নেত্রকোনা চন্দ্রনাথ ডিগ্রী কলেজে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সমতল,পাহাড় ও হাওর সুরক্ষায় জলবায়ু তহবিল নিশ্চিত করার দাবীতে `Student’s Voice for Climate Justice’ এই শিরোনামে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি, নেত্রকোনা এবং জাতীয় পরিবেশ পদক প্রাপ্ত বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা বারসিক।
এ উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা প্রকৃতি বন্ধন, উপস্থিত বক্তৃতা, কুইজ প্রতিযোগিতা ও আলোচনা অনুষ্ঠান এর আয়োজন করে। চন্দ্রনাথ ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষ মো: আনোয়ার হাসান এর সভাপতিত্বে ও যুব সংগঠক রনি খান এর সঞ্চালনায় প্রকৃতি বন্ধনে সংহতি প্রকাশ করেন শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি’র সভাপতি সহ: অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার, কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলপনা বেগম, কবি ও কথাসাহিত্যিক সোহরাব উদ্দিন আকন্দ, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়ক মো: অহিদুর রহমান, চন্দ্রনাথ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মো: জহিরুল ইসলাম সবুজসহ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ।
প্রকৃতি বন্ধনে শিক্ষার্থীরা প্লে কার্ড, ফ্যাস্টুন প্রদর্শন এবং জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে স্লোগানের পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশ সমূহের প্রতি লাল কার্ড প্রদর্শণ করেন। জলবায়ু ন্যায্যতার দাবীতে নেত্রকোণা জেলার শিক্ষার্থীরা প্লেকার্ডে জলবায়ু পরিবর্তনের দায়ী দেশের প্রতি প্রতিবাদ ও কার্বন দূষণ কমানোর জন্য আহ্বান জানিয়ে এই ধর্মঘট পালন করেন। শিক্ষার্থীরা তাদের প্লেকার্ডে “উত্তপ্ত পৃথিবী, বিপন্ন কৃষি,বিপন্ন মানব জীবন”,কার্বন দূষণ থামাও”, “কার্বন দূষণের জন্য ধনীদেশ দায়ী,” মাটি-পানি ও বায়ু দূষণ থামাও,” “জীবাশ্ম জ্বালানী অধিক ব্যবহার থামাও”,“কার্বন নি:সরণ কারী ধনী দেশ জলবায়ু পরিবর্তনে কথায় নীরব কেন?”, চাই জলবায়ু ন্যায্যতা”,“আমাদের ভবিষ্যত আমাদের হাতে”, “জলবায়ু পরিবর্তন বাড়ছে, বাড়ছে দূর্যোগ, বাড়ছে উদ্বাস্তুতা, বাড়াছে নগরদারিদ্রতা,চাই হাওর জলবায়ুন্যায্যতা সহ ১৩৫ টি প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করে জানিয়ে দেয় আমারা জীবাশ্ম জ¦ালানী ব্যবহার কমানোর জন্য পৃথিবীর ধনীদেশের প্রতি আহ্বান জানাই। এ সময় অধ্যক্ষ আনোয়ার হাসান তাঁর বক্তব্যে বলেন ‘নেত্রকোনা একটি কৃষি নির্ভর প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যময় এলাকা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হাওর অঞ্চলের মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে, কৃষি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
এ অঞ্চলের জন্য জলবায়ু তহবিল নিশ্চিত করতে হবে।’ বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়ক ও পরিবেশবিদ মো: অহিদুর রহমান তাঁর বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় স্থানীয় উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন ‘নদী-হাওরসহ প্রাকৃতিক জলাভূমিগুলো রক্ষা করতে হবে। স্থানীয় কৃষি ও লোকায়ত জ্ঞানকে প্রাধান্য দিলে জলবায়ু পরিবর্তনের খারাপ প্রভাব মোকাবেলা করা সহজ হবে। আমাদের প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা নিতে হবে।’ শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি সহ: অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন ‘ধনী দেশ সমূহের অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণের খারাপ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের মতো দেশের উপর। সুতরাং তাদেরকে জলবায়ু ক্ষতি পূরণ দিতে হবে। জলবায়ু বিষয়ে বিশ^নেতাদের অঙ্গিকার রক্ষা করতে হবে।’ প্রকৃতি বন্ধনে জনসচেতনতার উপর জোর দেন সাংবাদিক আলপনা বেগম। তিনি বলেন ‘আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। জলবায়ু সুরক্ষার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের সমস্ত স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে এ বিষয়ে ব্যপক গণসচেতনতা তৈরি করা সম্ভব। সুতরাং সবাইকে যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে।’
আলোচনা শেষে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা ও কুইজ প্রতিযোগীতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
Leave a Reply