বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন

এই মাত্র পাওয়া

ভোলায় সুপারিপাতার খোলে তৈরি হচ্ছে তৈজসপত্র

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট : বুধবার, ২ আগস্ট, ২০২৩
  • ১৩৩ পঠিত

দিগন্ত ডেক্স : ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নে ঝরে পড়া সুপারিগাছের পাতার খোল (গাছের সঙ্গে পাতার লেগে থাকা আবরণ) দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ওয়ান টাইম প্লেট, বাটি, কাপসহ নানা ধরনের তৈজসপত্র। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদানে প্রস্তুতকৃত আধুনিক স্বাস্থ্যসম্মত এসব পণ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারগুলোতে।

উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের জনতা বাজার এলাকায় মো. রিফাত ভুঁইয়া, মো. সোয়েব মিয়া ও নুরে আরাফাত নামের ৩ যুবক গড়ে তুলেছেন তৈজসপত্র উৎপাদন প্রতিষ্ঠান ইকো ড্রিম বিডি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ  শিল্পকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।

সরেজমিনে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হয় তাদের ব্যবসার যাত্রা। তিন মাস ধরে চলছে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন। এ কারখানায় প্লেট, বাটি, ফুটবক্স, সস বাটি, চায়ের কাপ, চামচসহ ১৪ ধরনের তৈজসপত্র তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে ঢাকা, বরিশাল, চট্রগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয় এসব পণ্য। প্রতিষ্ঠানে তৈরি হওয়ায় সুপারি পাতার তৈরি তৈজসপত্র দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করছেন স্থানীয়রা।

উদ্যোক্তা নুরে আরাফাত, মো. রিফাত ভূঁইয়া ও মো. সোয়েব মিয়া জানান, তারা তিনজন মিলে নতুন কিছু করার উদ্যোগ নেন। পরে ইউটিউব দেখে সুপারিপাতার খোল থেকে তৈজসপত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। এরপর তারা মেশিন ক্রয় করে কয়েক দিন পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করে। চরফ্যাশন উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সুপারির পাতার খোল সংগ্রহ করেন। বর্তমানে তাদের কারখানায় দৈনিক প্রায় এক হাজার পিস বিভিন্ন তৈজসপত্র উৎপাদন হচ্ছে।

তারা আরও জানান, তাদের স্টাফরা সুপারিপাতা খোল বিভিন্ন এলাকায় থেকে ১ টাকা করে পিস ক্রয় করেন। এরপর সেই খোল ধুইয়ে রোদে শুকিয়ে নেন। এরপর আবারও বিশুদ্ধ পানি দিয়ে পরিস্কার করা হয়। তারপর মেশিনে দিয়ে প্লেট, বাটিসহ অনান্য পণ্য তৈরি করা হয়। তাদের তৈরি এসব তৈজসপত্র ৩টাকা থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়। তাদের কারখানায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে পাতা সংগ্রহ ও মার্কেটিংসহ ১০ জন কাজ করছেন।

স্থানীয় সুপারিবাগানের মালিক আব্দুল মন্নান জানান, তার প্রায় ২ একর জমিতে সুপারির বাগান রয়েছেন। আগে সুপারির বাগানের পাতা পড়ে গিয়ে নিচেই নষ্ট হতো। কিন্তু এখন এ কারখানা হওয়াতে আমাদের সুপারির ঝরে পড়া পাতার মূল্য হয়েছে। তারা আমাদের থেকে খোল ১ টাকা করে ক্রয় করে নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন আখন বলেন, তিন বেকার যুবকের এমন ব্যাতিক্রম উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। তারা নিজেদের একান্ত প্রচেষ্টায় আজ স্বাবলম্বী হয়েছে। আমি তাদের তৈরি পণ্য ব্যবহার করেছি। এগুলো সম্পূর্ণ পরিবেশ বান্ধব ও দৃষ্টিনন্দন। তাই উপজেলা পরিষদ থেকে তাদের সব ধরনের সহায়তা দেয়ার কথা জানান তিনি।

উদ্যোক্তা মো. সোয়েব মিয়া আরও বলেন, দেশের বাইরে এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই আগামীতে তারা দেশের বাইরে রপ্তানি করার উদ্যোগে নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বায়ারদের সঙ্গে কথা চলছে। সব মিলিয়ে আরও বৃহৎ পরিসরে তাদের এ কার্যক্রমের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন যুবক সোয়েব।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 digantabangla24.com