দিগন্ত ডেক্স : বিজিএমইএর সিদ্ধান্ত মেনে গাজীপুরে অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে এসব কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। অপ্রীতিকর ঘটনা ও সহিংসতা ঠেকাতে বাড়তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।
জানা গেছে, ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে ২৩ অক্টোবর থেকে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। গাজীপুরের মৌচাকের তেলির চালা এলাকা থেকে শুরু হওয়া শ্রমিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। কোনাবাড়ি, মৌচাক, সফিপুর, চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, ভোগড়া বাইপাস সড়ক, বাসন সড়ক, চান্দনা চৌরাস্তা, তেলিপাড়াসহ বেশকিছু এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের নামে গাড়ি, কারখানায়, শপিংমলে অগ্নিসংযোগ ও বেশকিছু কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় গণপরিবহন। শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ ও সহিংস আন্দোলনে পথচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ অবস্থায় গাজীপুর শিল্প এলাকায় দুই শতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে সরকার, মালিক, বিজিএমইএ, শ্রমিক সংগঠনের নেতারা আলোচনায় বসেন। গঠন করা হয় মজুরি বোর্ড যেখানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে নভেম্বর মাসে ঘোষণা ও ডিসেম্বর মাস থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। এ অবস্থায় শনিবার থেকে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমইএ। সিদ্ধান্ত মেনে গাজীপুরে অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা।
সিদ্ধান্ত মেনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সকাল থেকেই কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভ্যালমন্ট ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (রক্ষণাবেক্ষণ), নুর হাসান জুয়েল।
তিনি বলেন, আমাদের কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করেননি। বহিরাগতদের হামলা ও ভাঙচুর ঠেকাতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। শনিবার সকাল থেকে শান্তি পূর্ণ পরিবেশে কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে গাজীপুরে শ্রমিকদের সহিংসতা ঠেকাতে তিন হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর-২ শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম।
তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ ও সহিংসতায় দুই শতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সকাল থেকে অধিকাংশ কারখানা খোলা হয়েছে। সেখানে শান্তি পূর্ণ পরিবেশে কাজ চলছে।
এ ছাড়া কারখানা এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক গ্রেপ্তার ও মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, সকাল থেকে সব কারখানা খোলা আছে এবং শ্রমিকরা কাজ করছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শ্রমিকরা বুঝতে পেরেছে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের ব্যবহার করেছে। তাদের ন্যায়সংগত দাবিতে সরকার আন্তরিক। এ জন্য শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন রয়েছে।
Leave a Reply