বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ অপরাহ্ন

এই মাত্র পাওয়া

ক্যানসার শনাক্ত ও চিকিৎসায় নতুন প্রযুক্তি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট : সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
  • ১১২ পঠিত

দিগন্ত ডেক্স : ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সিডনির (ইউটিএস) একদল গবেষক একটি নতুন ডিভাইস তৈরি করেছেন; যা রক্তের নমুনা থেকে ক্যানসার কোষ শনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করতে পারে। এ প্রযুক্তি ডাক্তারদের আক্রমণাত্মক বায়োপসি সার্জারি এড়াতে এবং চিকিৎসার অগ্রগতি নিরীক্ষণ করতে সক্ষম করে।

ক্যানসার অসুস্থতায় অস্ট্রেলিয়ায় মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ। প্রতি বছর দেড় লাখেরও বেশি অস্ট্রেলিয়ান মরণব্যধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যাদের ক্যানসারের সন্দেহ রয়েছে, বিশেষ করে লিভার, কোলন বা কিডনির মতো অঙ্গে, তাদের রোগ নির্ণয়ের জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়।

ইউটিএস স্কুল অব বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক মজিদ ওয়ারকিয়ানি বলেন, বায়োপসি করতে গেলে রোগীরা অস্বস্তি বোধ করেন। সেই সঙ্গে অস্ত্রোপচার এবং মোটা অঙ্কের খরচের কারণে জটিলতার ঝুঁকি বাড়ায়। তবে যথাযথ চিকিৎসার জন্য সঠিক ক্যান্সার নির্ণয় গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যাপক মজিদ বলেন, ‘রক্তের নমুনায় টিউমার কোষের মূল্যায়নের মাধ্যমে ক্যানসার সৃষ্টিকারী টিস্যু বায়োপসি করার চেয়ে এই প্রযুক্তি অনেক কম আক্রমণাত্মক। এটি ডাক্তারদের বার বার পরীক্ষা করা এবং চিকিৎসার প্রতি রোগীর প্রতিক্রিয়া জানা যায়।’

স্ট্যাটিক ড্রপলেট মাইক্রোফ্লুইডিক ডিভাইসটি দ্রুত সঞ্চালিত টিউমার কোষ শনাক্ত করতে সক্ষম। এটা প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়া টিউমার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রক্ত প্রবাহে প্রবেশ করে। ডিভাইসটি সাধারণ রক্তের কোষ থেকে টিউমার কোষকে আলাদা করতে ক্যানসারের একটি বিপাকীয় স্বাক্ষর ব্যবহার করে।

অধ্যাপক মজিদ সোমবার এক বিবৃতিতে জানান, ‘১৯২০-এর দশকে অটো ওয়ারবার্গ আবিষ্কার করেছিলেন যে ক্যানসার কোষগুলো প্রচুর গ্লু­ুকোজ গ্রহণ করে এবং এরফলে আরও ল্যাকটেট উৎপাদন করে। আমাদের ডিভাইস পিএইচ সংবেদনশীল ফ্লুরোসেন্ট রঞ্জক ব্যবহার করে বর্ধিত ল্যাকটেটের জন্য একক কোষ নিরীক্ষণ করে যা কোষের চারপাশে অ্যাসিডিফিকেশন শনাক্ত করে।’

‘মাত্র এক মিলিলিটার রক্তে কোটি কোটি রক্ত কোষের মধ্যে একটি একক টিউমার কোষ থাকতে পারে। এটি খুঁজে বের করা খুবই কঠিন। নতুন শনাক্ত করণ প্রযুক্তিতে ৩৮ হাজার ৪০০টি চেম্বার রয়েছে যা বিপাকীয়ভাবে সক্রিয় টিউমার কোষের সংখ্যা বিচ্ছিন্ন এবং শ্রেণীবদ্ধ করতে সক্ষম,’ তিনি বলেছেন।

একবার টিউমার কোষগুলোকে ডিভাইসের সাথে শনাক্ত করা হলে তারা জেনেটিক এবং আণবিক বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। যা ক্যান্সার নির্ণয় এবং শ্রেণিবিন্যাসে সহায়তা করতে এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসার পরিকল্পনাগুলো জানাতে পারে।

সঞ্চালনকারী টিউমার কোষগুলোও মেটাস্টেসিসের অগ্রদূত-যেখানে ক্যান্সার দূরবর্তী অঙ্গগুলোতে স্থানান্তরিত হয়; যা ক্যানসার-সম্পর্কিত মৃত্যুর কারণ ৯০ শতাংশ। এই কোষগুলো  ক্যান্সার মেটাস্ট্যাসিসের জীব বিজ্ঞানের অন্তর্দৃষ্টি     প্রদান করতে পাওে; যা নতুন চিকিৎসার বিকাশকে জানাতে পারে। বিদ্যমান তরল বায়োপসি প্রযুক্তিগুলো সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং দক্ষ অপারেটরদের উপর নির্ভর করে। ক্লিনিক্যাল সেটিংসে তাদের প্রয়োগও সীমিত করে।

এই নতুন প্রযুক্তিটি উচ্চ সম্পদ সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষিত অপারেটরদের উপর নির্ভর না করে গবেষণা এবং ক্লিনিকাল ল্যাবগুলোতে একীভূতকরণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ডাক্তারদের একটি ব্যবহারিক এবং সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে ক্যান্সার রোগ নির্ণয় ও পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম করবে।
তথ্যসূত্র : বাসস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 digantabangla24.com