দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন নেত্রকোণার দুর্গাপুরের রাজিব মিয়া। তার বাড়ি চন্ডিগড় ইউনিয়নের পাথারিয়া গ্রামে। রাজিব ওই গ্রামের কৃষক আইয়ুব আলীর ছেলে। পায়ে ব্যান্ডেজ নিয়ে দিনাতিপাত করছেন রাজিব।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে পুলিশ খুব কাছ থেকে রাজিব মিয়াকে টার্গেট করে তার পায়ে গুলি করে। পায়ের একপাশ দিয়ে গুলি ঢুকে হাড়মাংস ভেদ করে অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। পরে তার মামাতো ভাই তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাকে লক্ষ করেও পুলিশ গুলি শুরু করে। পরবর্তীতে স্থানীয় জনতার সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় রাজিব কে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পঙ্গু হাসপাতালে চলে তার পায়ের অপারেশন। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। রাজিব ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ক্লিনারের কাজ করতেন। তার আয় দিয়েই চলতো পুরো পরিবার। আজ সে বিছানায় পরে আছে।
ইতোমধ্যে ছাত্র আন্দোলনে সারাদেশ থেকে আহত ও নিহতদের খোঁজ নেয়া শুরু করেছেন বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলা থেকে আন্দোলনে নিহত ও আহতদের সুস্থ্যতা নিয়ে কথা বলেন অত্র এলাকার সন্তান, বিএনপি‘র আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তারেক রহমানের নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত বিভিন্ন জনকে আর্থিক সহায়তা সহ নানাবিধ সহায়তা দেয়া শুরু করেছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহত রাজিব মিয়া কে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ১টি হুইলচেয়ার, রাজিব ও তার পরিবারের জীবিকা নির্বাহের জন্য ১টি ইজিবাইক (অটোরিকসা) প্রদান করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এ সময় অন্যদের মাঝে, জেলা বিএনপি‘র সাবেক সহ:সভাপতি আলহাজ্ব ঈমাম হাসান আবুচান, উপজেলা বিএনপি‘র আহবায়ক জহিরুল আলম ভুইয়া, সদস্য সচিব আব্দুল আওয়াল, যুগ্ন-আহবায়ক রফিকুল ইসলাম রফিক, জামাল উদ্দিন মাস্টার, বিএনপি নেতা এম এ জিন্নাহ্, শিক্ষাবিদ শহীদুল্লাহ খান, ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আব্দুস সাত্তার মাস্টার, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব সম্রাট গনি সহ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজিব মিয়ার মা রাবেয়া খাতুন বলেন, পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে। রাজিবের এই অসহায়ত্বের কথা ভেবে বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, ব্যারিস্টার কায়সার কামালের মাধ্যমে যে উপহার দিয়েছেন এতে আমি অনেক খুশি হয়েছি। মহান আল্লাহ তারেক রহমানের ভালো করুন।
রাজিব মিয়া বলেন, আমি ভাবছিলাম সারাটা জীবন মনে হয় এভাবেই থাকতে হবে আমাকে। আমার সব বন্ধুরা রাস্তায় চলাফেরা করে, আমি শুধু চেয়ে চেয়ে দেখি। শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশে যে ধবংস চালানো হয়েছে, মহান আল্লাহ্ তারও বিচার শুরু করেছেন। আমার পরিবারের কথা ভেবে বিএনপি‘র চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব যে উপহার পাঠিয়েছেন আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের পাশে থেকে রাজনীতি করার নির্দেশ দিয়েছেন। ছাত্র আন্দোলনে আহত রাজিব সহ এলাকার বিভিন্ন জনের করুণ অবস্থা নিয়ে আমি উনার সাথে কথা বলেছি। তারেক রহমানের নির্দেশে আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাকরণ সহ জীবিকা নির্বাহের জন্য বিভিন্ন উপহার প্রদান শুরু করেছি। আপনারা তারেক রহমান সাহেবের জন্য দোয়া করবেন।
Leave a Reply