শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৯ অপরাহ্ন

এই মাত্র পাওয়া

যারা আল্লাহর কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩৫ পঠিত

ডেস্ক নিউজ : পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে, একদল আল্লাহর কাছে প্রিয় সম্মানিত। আর অন্য দল মহান আল্লাহর কাছে নিকৃষ্ট ও ঘৃণিত। যারা আল্লাহর প্রিয় ও সম্মানিত, তারাই প্রকৃত সম্মানিত ও ভালো মানুষ। আর যারা আল্লাহর কাছে ঘৃণিত ও নিকৃষ্ট, তারাই প্রকৃত নিকৃষ্ট মানুষ। এই ভালো মানুষ আর খারাপ মানুষের মানদণ্ডও আল্লাহ তাআলা ঠিক করেছেন।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে লোকসকল! তোমাদের আমি একজন পুরুষ ও একজন নারী হতে তৈরি করেছি, তারপর বিভিন্ন বংশ ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, তোমরা যাতে একে অন্যকে চিনতে পার। যে লোক তোমাদের মধ্যে বেশি পরহেজগার সে-ই আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি মর্যাদার অধিকারী। আল্লাহ তাআলা সব কিছু সম্পর্কে জ্ঞাত, সব খবর রাখেন। ’ (সুরা : হুজরাত, আয়াত : ১৩)।

অর্থাৎ আল্লাহর কাছে কোনো ব্যক্তির মর্যাদাবান হওয়ার জন্য তার বংশ, ধন-সম্পদ, পেশিশক্তি ইত্যাদির কোনো মূল্য নেই। যদি তার ঈমান পরিশুদ্ধ না হয়, যদি তার মধ্যে তাকওয়া না থাকে, তবে এগুলোরই কিছুই বান্দার কোনো কাজে আসবে না। যদি শুধু বংশ ও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য মানুষের মর্যাদার মাপকাঠি হতো তাহলে নুহ (আ.)-এর পুত্র কেনান বেঈমান হয়ে ধ্বংস হয়ে যেত না। এ জন্য নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কিরামকে দম্ভ, অহংকার ও পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য নিয়ে গৌরব দেখাতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ভাষণে বলেন, হে জনমণ্ডলী! তোমাদের থেকে আল্লাহ তাআলা জাহেলিয়াত যুগের দম্ভ ও অহংকার এবং পূর্বপুরুষের গৌরবগাথা বাতিল করেছেন। এখন মানুষ দুই অংশে বিভক্ত : একদল মানুষ নেককার, পরহেজগার, আল্লাহ তাআলার নিকট প্রিয় ও সম্মানিত এবং অন্য দল পাপিষ্ঠ, দুর্ভাগা, আল্লাহ তাআলার নিকট অত্যন্ত নিকৃষ্ট, নিচু ও ঘৃণিত। সব মানুষ আদমের সন্তান। আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে মাটি দিয়ে তৈরি করেছেন…। (তিরমিজি, হাদিস : ৩২৭০)

তাই অর্থ-সম্পদ ও সৌন্দর্যও আল্লাহর দরবারে মর্যাদা বৃদ্ধির মাপকাঠি নয়। কারো চেহারা ফেরেশতার মতো সুন্দরই হলেই যে সে সর্বোত্তম মানুষ, তা দাবি করা অযৌক্তিক। অন্তরে হিদায়াতের আলো না থাকলে বাহ্যিক সৌন্দর্য মূল্যহীন। আবার আয়ের উৎস যদি হারাম হয় এবং উপার্জন ও খরচ আল্লাহর নির্দেশনা মোতাবেক না হয়, বরং অর্থ-সম্পদ আল্লাহর নাফরমানিতে ব্যয় হয়, তবে তার সেই সম্পদও আল্লাহর দরবারে তার মর্যাদা বৃদ্ধি করবে না। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের বাহ্যিক চেহারা ও বিত্তবৈভবের প্রতি লক্ষ করেন না, বরং তিনি তোমাদের কার্যকলাপ ও অন্তরের দিকে লক্ষ রাখেন।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১৪৩)

এমনিভাবে যদি শুধু শক্তি আল্লাহর প্রিয় হওয়ার মাধ্যম হতো, তাহলে আদ-সামুদ জাতিও আল্লাহর প্রিয় হতো। হ্যাঁ, ঈমান ও তাকওয়া অর্জনের পর উল্লিখিত সবই মানুষের সম্মানকে আরো বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু ঈমান ও তাকওয়াই হলো মূল বিষয়। তাই মহান আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হলে অবশ্যই তাঁর হুকুম মোতাবেক জীবন গড়তে হবে। পরিপূর্ণ তাকওয়া অর্জনের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। গুনাহ থেকে বিরত থাকতে হবে। কোরআন-হাদিস মোতাবেক জীবন গড়তে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরিপূর্ণ মুত্তাকি হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 digantabangla24.com