নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নদী-বন-পাহাড়-খাল-পুকুর-গাছ-হাওর-মাটি-পানি-বায়ু নিয়ে আমাদের প্রকৃতি টিকে থাকে। মানুষের অবিবেচনাসুলভ কর্মকান্ডের ফলে প্রকৃতির প্রতিটি উপাদান আজ বিলুপ্ত, দূষিত ও মানুষের ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। মানুষ দিন দিন প্রকৃতি থেকে সরে যাচ্ছে।
এ উপলক্ষে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও নেত্রকোনা সবুজ সংহতি এর আয়োজনে “প্রাণ প্রকৃতি সংরক্ষণে যুবদের করণীয়” শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নেত্রকোনা সদর উপজেলার ২৫টি যুব সংগঠনের প্রতিনিধি, নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয় ও নেত্রকোনা সরকারী কলেজের শিক্ষার্থদের অংশগ্রহণে বুধবার ( ৬ নভেম্বর) দিনব্যাপী এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন, নেত্রকোনা সম্মিলিত যুবসমাজের সভাপতি পার্থ প্রতিম সরকার, সেভ দ্যা এনিমেলস’র এর সভাপতি রিফাত আহমেদ রাসেল, নেত্রকোনা সবুজ সংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা হৃদয় সাগর। আলোচনায়, শিক্ষার্থীরা প্রকৃতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে নিজ নিজ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
নেত্রকোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফসা ইসলাম মোহ বলেন, “যখনই তাপদাহ শুরু হয় তখনই আমরা গাছ লাগাই, জলাভূমি নদী পুকুর রক্ষার কথা বলতে থাকি, কিন্তু যখন গরম কমে যায় তখন আর আমরা এসব নিয়ে ভাবিনা। আমরা প্রকৃতির যতœ নিলে প্রকৃতি আমাদের বাঁচাবে।”
মির্জা হৃদয় সাগর বলেন, “নদীর সাথে সংযুক্ত খালগুলি উদ্ধার ও খনন করে হাওর ও নদীর সংযোগ স্থাপন করে পানি চলাচলের সুবিধা তৈরী করা। জেলার বড় বড় পুকুরগুলো সুরক্ষা করা। পাহাড়ের পূর্বের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বেশি করে পরিবেশ বান্ধব বৃক্ষ রোপন করলেই পৃথিবীর উত্তাপ কিছুটা হলেও কমবে।
অংশগ্রহনকারী শিক্ষার্থীরা, হাওরের মাছের অভয়াশ্রম তৈরীতে সহযোগিতা, ফসলরক্ষা বাঁধ স্থায়ীভাবে করার উদ্যোগ গ্রহণ, কৃষিজমি সুরক্ষায় যথাযথ আইন প্রয়োগ করা, সকল খেলার মাঠ রক্ষা করা, পলিথিন মুক্ত নেত্রকোনা জেলা ঘোষণা করা, হাওর অঞ্চলের জন্য শস্যবীমা চালু করা, হাওরাঞ্চলকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা না করা, টপসয়েল ব্যবহার বন্ধ করা, বৃষ্টির পানি ধারণ করা, ভূগর্ভের পানি উত্তোলন কমিয়ে আনা, হাওরে হিজল, করচ, তলাম, বরুম, মান্দার, বেত, মূর্তা, জারুল, কদম, শিমুল, বিয়াম, চালতা, অর্জুন, পিতরাজ গাছের বাগান তৈরী সহ নানবিধ প্রকৃতিবান্ধব কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
Leave a Reply