ডেক্স নিউজ : ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের প্রস্তুতির কাজ শুরু করেছে শিক্ষা বোর্ড। আগামী (অক্টোবর) মাসেই এই ফল প্রকাশ হতে পারে। যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলোর খাতা মূল্যায়ন করে এবং বাকি স্থগিত বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলেই এ প্রক্রিয়ায় ফল প্রকাশ হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সাবজেক্ট ম্যাপিং হলো একটি বিষয়ে পূর্বতন পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড়। করোনা মহামারির সময়েও এই প্রক্রিয়ায় ফল প্রকাশ করা হয়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা যায়, ২২ আগস্ট শিক্ষা বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সভায় যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে সেগুলোর নম্বর দেওয়ার প্রস্তাব ওঠে। প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য গত সপ্তাহে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
জানা যায়, এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোতে নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে এসব বিষয়ে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) এবং মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় করা হবে। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জেএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ৭৫ শতাংশ নম্বর যোগ করে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীকে নম্বর দেওয়া হবে। যেমন গণিতে কেউ জেএসসিতে ১০০ নম্বর পেয়ে থাকলে সেখান থেকে ২৫ এবং এসএসসিতে ১০০ নম্বর পেয়ে থাকলে ৭৫ নম্বর নেওয়া হবে। এ দুটি নম্বর যোগ করলে এইচএসসিতে গণিতে ওই শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর হবে ১০০।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার যুগান্তরকে বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার জন্য একটা প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি অনুমোদিত হলে সে অনুযায়ী ফল প্রকাশ করা হবে।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় সব পরীক্ষার্থীকে পাশ করানো হয়। তখন এসএসসি, জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের গড় মূল্যায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পরের বছর কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা নিয়ে বাকি বিষয়ের ফল একইভাবে তৈরি করা হয়।
এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী সাড়ে ১৪ লাখ। পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। তবে বন্যার কারণে সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় ৯ জুলাই। স্থগিত হওয়ার আগে ছয় থেকে সাতটি পরীক্ষা হয়েছিল। বাকিগুলো হওয়ার আগেই স্থগিত হয়েছে। ব্যবহারিক পরীক্ষাও হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের কারণে কয়েক দফা স্থগিত হওয়ার পর ১১ সেপ্টেম্বর থেকে স্থগিত পরীক্ষাগুলো শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামলে অন্তর্বর্তী সরকার পরীক্ষার সময় আরও দুই সপ্তাহ পিছিয়ে এবং নম্বর কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু গত ২০ আগস্ট কয়েকশ পরীক্ষার্থী সচিবালয়ে ঢুকে পরীক্ষা না দেওয়ার দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেদিনই সরকার তাদের দাবি মেনে নেয়।
Leave a Reply