কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার কলমাকান্দার পোগলা ইউপির পুঁটিজানা গ্রামে গোমাই নদী গ্রাস করেছে জমিসহ দুই পরিবারের বসতবাড়ী। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন তারা । বর্ষার আগে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে নদীর পাড়ের মসজিদসহ আরো বসতবাড়ী ভাঙনের কবলে পরতে পারে শঙ্কায় ওই এলাকার মানুষের। ভাঙনরোধে টেকসই সিসি ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা জরুরী বলছেন স্থানীয়রা।
ওই গ্রামের মুন্সিবাড়ির মো. সেলিম ও ওমর ফারুক পরিবারের বসতবাড়িসহ জমি সবই ছিল। তাদের ৫৬ শতাংশ ভূমি গোমাই নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ওই দুটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছেন।
স্থানীয়রা সাংবাদিকদের জানান , প্রায় ১৫ দিন আগে গোমাই নদীর পাড়ে বাব দাদার বসত বাড়ি তাদের মাথা গুজার ভূমিটুকু কেড়ে নেয় নদী। এক দিনেই নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে দুই পরিবারের বসতভিটা।সন্তানদের নিয়ে থাকার কোন বাসস্থান নেই তাদের। বাড়ীর পাশে রাস্তার আশ্রয় নেন ভুক্তভোগী পরিবার। তাদের রাত কাটে গ্রামবাসী কারো ঘরে । আর জায়গা না মিললে নদীর তীরেই ছোট একটা ছাপরা ঘরে রাত কাটান দুই পরিবারের ১১ জন সদস্যরা । নেই কোন আয়-উপার্জনের পথ তাদের। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটান তারা। অসহায় হয়ে পরেছেন ভুক্তভোগীরা। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বর্ষায় স্রোতের তীব্রতা থেকে রক্ষা করার জন্য বালুভর্তি জিও ব্যাগের ডাম্পিং কোন উদ্যোগ নেননি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। যার ফলে আবারও নদীর পাড়ের বসতবাড়ি ভাঙনের কবলে পরার সম্ভাবনা শঙ্কায় রয়েছে ওই এলাকার মানুষের।
বসতবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব পুঁটিজানা গ্রামের মুন্সিবাড়ীর ওমর ফারুক, তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার ও সেলিম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বাব দাদার বসতবাড়ি ভেঙে নিয়েছে নদী। একমাত্র আশ্রয়স্থল ছিল আমাদের। তাও ভেঙে নিয়ে গেল। এখন আমাদের আর মাথা গোঁজার ঠাঁই রইলো না। ’
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসাক মিয়া নদীর ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভাঙনের শিকার হওয়া একটি মসজিদ অবকাঠামোকে রক্ষা করার জন্য এলাকার মানুষকে নিয়ে বস্তায় মাটি দেওয়া হয় । মো. সেলিম ও ওমর ফারুক পরিবারের নতুন করে ভূমি ক্রয় করে বাড়ি-ঘর করার সামর্থ্য নেই। নদীর ভাঙনে তাদের বাড়ি-ঘর জমি সবই প্রায় শেষ।’
এবিষয়ে পোগলা ইউপির চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, পুঁটিজানা গ্রামে নদীর পাড়ে মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অনেক বসতবাড়ি রয়েছে। এলাকার ভাঙনরোধে টেকসই সিসি ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হবে বলে জানান তিনি ।
এবিষয়ে জানতে নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান এর (০১৭৫৬-৭৭৭৭৯২) মুঠোফোনে রিং হলেও তিনি রিসিভি করেননি। তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোহাম্মদ সোহাগ ফকির বলেন, তাদের সাথে এই বিষয়ে কেউ যোগাযোগ করেননি।
Leave a Reply