দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : একদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানীর ঈদ। আর এ ঈদকে ঘিরে দুর্গাপুর পৌরশহরের দেশওয়ালী পাড়াতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামার পল্লীর শ্রমিকরা। টুং টাং শব্দে মুখরিত রয়েছে কামার পল্লী। কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কামাররা। পশুর মাংস কাটার সরঞ্জামাদি তৈরি ও পুরাতন দা, বটি, ছুরি, চাপাতি শান দেয়ার ধুম পড়েছে। কোরবানীর ঈদকে ঘিরে শেষ মুহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দুর্গাপুর পৌরশহরের কামার পট্টির দোকান গুলোতে বিদ্যুৎচালিত শান মেশিন ব্যবহার করে অল্প সময়ে অধিক কাজ করছেন কামররা। পাশাপাশি আগুনের বাদির মাধ্যমে লোহা পেটাচ্ছেন অন্য কর্মচারীরা। এছাড়া গ্রামে গঞ্জে পাড়া মহল্লায় মৌসুম ভিত্তিক কামাররা রেত (শান দেয়ার যন্ত্র) দিয়ে দা, বটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম শান দিচ্ছেন।
বাকলজোড়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অনিল কর্মকার জানান, সারা বছরই কষ্ট করে চলতে হয়। ঈদ এলেই আমাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। চাঁদ রাত পর্যন্ত নির্ঘুম কাটাতে হয়। একসময় এ পেশায় অনেক লোক ছিল। কিন্তু এখন আগের মতো কাজের লোকও মিলছে না। বাপ-দাদার ব্যবসা কোনরকম টিকিয়ে রেখেছি। তাছাড়া ক্রেতাও কমে গেছে। এখন আধুনিক যন্ত্রের কাছে আমরা অনেকটাই বে-মানান হয়েগেছি।
পৌরশহরের কামারপল্লীর পুরাতন ব্যবসায়ী সুবোধ আদিত্য বলেন, পশু জবাই থেকে শুরু করে কোরবানীর মাংস রান্নার চুড়ান্ত প্রস্ততি পর্যন্ত দা, বটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি প্রয়োজন হয়। বছরের অন্যান্য সময় কাজ কম থাকলেও এ সময়ে আমরা কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ি। এবছরের চিত্র একটু ভিন্ন, জিনিষপত্রের দাম থাকায় মানুষ এখন নতুন দা, বটি ক্রয় করছেন না। পুরাতন কাজ গুলো করেই সময় পার করছি। সমিতির থেকে টাকা ঋণ করে দোকানে মাল তুলেও বিপাকে পড়েছি। বেচা-কেনা নাই বল্লেই চলে।
শহরের অন্য কামার ব্যবসায়ী আব্দুল আলী জানান, সারা বছরই আমাদের মোটামুটি বিক্রি হয়। তবে তুলনামুলকভাবে এ বছর বেচা কেনা আগের তুলনায় কম। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পন্যের দাম বাড়েনি। তাদের আশা সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। এ জন্য সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
পৌরশহরের ক্রেতা শাহিন মিয়া, এরশাদ মিয়া জানান, একটি দা আকারে ও লোহা ভেদে ৩শ থেকে ৬শ টাকা, ছুরি ১শ থেকে ৫শ টাকা, হাঁড় কাটার চাপাতি একেকটি ৪শ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং পুরোনো যন্ত্রপাতি মেরামত করতে ১শ থেকে ৩শ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছেন কামাররা। সবকিছুর দাম থাকায় নতুন ক্রয়ের চেয়ে পুরাতন জিনিষ গুলো মেরামতের মাধ্যমেই এবারের ঈদে কুরবানির কাজ শেষ করবো।
Leave a Reply