দিগন্ত ডেক্স : ছেলেকে দিয়ে প্রেমের ফাঁদ পেতে নারায়ণগঞ্জের সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ভারতে নিয়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পাচারের বিষয়টি টের পেয়ে ওই কিশোরী ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ভারতের জয়পুরের একটি সেফহোমে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মা। বিক্রি করে দেওয়ার সঙ্গে অভিযুক্ত প্রেমিকের মা ফারজানা ওরফে অনামিকাকে জয়পুর পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
এ ঘটনায় কিশোরীর মা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। মেয়েকে ফিরে পেতে পুলিশ প্রশাসনসহ সরকারের সযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপা ডিএন রোড এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিকের মেয়ে নগরীর একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর সঙ্গে পাশের বাড়ির ভাড়াটিয়া আবু নাঈম প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এই সম্পর্কের জেওে গত ১৪ মার্চ সকালে মেয়েটি মার্কেটে শপিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের বের হয়ে নিখোঁজ হয়। সম্প্রতি ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খোঁজ মিলে ওই কিশোরী ভারতের একটি সেফহোমে আছে। নিখোঁজ কিশোরীর মোবাইল ফোনে তার মাকে জানায়, প্রেমিক আবু নাঈম ও তার মা ফারজানা ওরফে অনামিকা কৌশলে বাসা থেকে বের করে চিকিৎসা করানোর নাম করে তাকে ভারতে নিয়ে এসেছে। প্রেমিক নাঈমের মা ফারজানা ওরফে অনামিকা বেগম তাকে পতিতালয়ে বিক্রি করার সময় সে কৌশলে তাদের কাছ থেকে পালিয়ে ওই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় জয়পুরের একটি সেফহোমে আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফারজানাকে গ্রেপ্তার করেছে। এখন যে করেই হোক তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কান্নাকাটি করছে এই কিশোরী।
মেয়েকে ফিরে পেতে চলতি মাসের ১০ মে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন মেয়ের মা।
ভারতে পাচার হয়ে যাওয়া এই শিক্ষার্থীকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি স্থানীয়দেরও। খেলাঘর আসরের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, নিশ্চই এই ঘটনা ওই ছেলে বা ছেলের মা দুজনেই ঘটায়নি। এর সঙ্গে নিশ্চয়ই আরো অনেকে জড়িত। এই ঘটনা যথাযথ তদন্ত করে পাচারের সাথে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানাই। পাশাপাশি মেয়েটিকে দ্রুত ফিরিয়ে আনারও দাবি জানাই।
ভারতে পাচার হয়ে যাওয়া কিশোরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতার আশ^াস দিয়েছেন জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আসাদুজ্জামান। তিনি সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের সহযোগিতা নেয়ার জন্য ভিকটিম পরিবারকে পরামর্শ দেন।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা জানান, ইন্টারপোল বা ভারতীয় দুতাবাসের মাধ্যমে ভারতে উদ্ধার হওয়া কিশোরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছে পুলিশ। এরই মধ্যে নিখোঁজ কিশোরীর মা থানায় জিডি করেছে। এটি এখন মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে পুলিশ তদন্ত করছে। মেয়েটি কিভাবে ভারতে গেলো, এর সাথে কোনো চক্র জড়িত কিনা সে ব্যাপারেও পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে। কোনো চক্র জড়িত থাকলে তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। খবর বাসস
Leave a Reply