বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:০১ পূর্বাহ্ন

এই মাত্র পাওয়া

মধ্যরাত থেকে উঠছে নিষেধাজ্ঞা, সর্বোচ্চ ইলিশ ধরার আশা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট : রবিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৬৩ পঠিত

দিগন্ত ডেক্স : দেশের প্রায় আড়াই লাখ জেলের দুই মাসের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে। আজ রোববার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাত থেকে উঠে যাচ্ছে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা। ইতোমধ্যেই জেলেরা নদীতে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এবার নিষেধাজ্ঞা কড়াকড়িভাবে পালিত হওয়ায় ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ানোর প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ইলিশ উৎপাদন বেশি হতে পারে বলে আশা তাদের।

ইলিশ সংরক্ষণে ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ছয়টি জেলার পাঁচটি ইলিশ অভয়াশ্রমে সবধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। আইন অমান্যকারীর জন্য কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইলিশের অভয়ারণ্য বরিশাল, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ভোলা, শরীয়তপুর ও পটুয়াখালী- এই ছয় জেলা নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিল। অভয়ারণ্য এলাকাগুলো মেঘনা নদীর চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার, ভোলার শাহবাজপুর চ্যানেলে ৯০ কিলোমিটার, ভোলার তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার, চাঁদপুর জেলার নড়িয়া ও ভেদেরগঞ্জ উপজেলায় ২০ কিলোমিটার এবং হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও বরিশাল সদর উপজেলা, গজারিয়া ও মেঘনা নদীতে ৮২ কিলোমিটার। ছয়টি জেলার মাছ ধরা থেকে বিরত থাকা দুই লাখ ৪৩ হাজার ৭৭৮ জন জেলের জন্য মাসে ৪০ কেজি করে দুই মাসে ৮০ কেজি হারে মোট ১৯ হাজার ৫০২ মেট্টিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এর আগে জানান, ২০০৮-০৯ অর্থবছরে যেখানে ইলিশের উৎপাদন ছিল দুই লাখ ৯৮ হাজার মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছেছে। জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণ করতে পারলে ইলিশের উৎপাদন আরও অনেক বাড়বে বলে মনে করেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, গত অক্টোবর মাসে মা ইলিশ প্রজনন মৌসুমে রেকর্ড ৫০ শতাংশ ইলিশ ডিম ছেড়েছে। এ প্রেক্ষিতে ৪০ হাজার কোটি জাটকা যুক্ত হয়েছে। আর দুই মাস এটির সুরক্ষা দেওয়াটা ছিল চ্যালেঞ্জ। এবার আশা করা যায়, সর্বোচ্চ পরিমাণ ইলিশ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে।

চাঁদপুরের একাধিক জেলে জানান, সরকার ঘোষিত দুই মাস নিষেধাজ্ঞা মেনে চলেছেন তারা। এখন নদীতে যেতে উন্মুখ হয়ে আছেন। নিষেধকালীন নদীতে নামেননি। সরকারের চাল সুবিধা পেয়েছেন বলেও জানান তারা।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, আমরা এ বছর অনেকটাই সফল হয়েছি। জেলা ও উপজেলা টাক্সফোর্স দল এবার ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে। গত দুই মাসে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ৭৭৪টি অভিযান পরিচালনা করে ৩৭১ জন জেলেকে আটক করে জেলে দেওয়া হয়। জব্দ করা হয় ৩৯ হাজার ১২৪ কেজি জাটকা। এছাড়া বিপুল পরিমাণ জাল জব্দ করা হয়।

বরিশালের মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারাও জানান, এই দুই মাস কড়া নজরদারি ছিল। কয়েক দিন ধরে জেলেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন মধ্যরাত থেকে নদীতে নামবেন।

এদিকে, ঈদের পর থেকে নৌকা, জাল মেরামতে মনোযোগী হয় লাখো জেলে। গত কয়েক দিন ধরে তারা প্রস্তুতি নিয়েছে মাছ ধরার। আজ মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেই তারা নদীতে নামবে।

ভোলা সদর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জেলেরা জানান, দুই মাস নদীতে অভিযান ছিল। তাই নদীতে যেতে পারেননি। ৩০ এপ্রিল রাত ১২টার পর নদীতে নামবেন। এর জন্য মাছ ধরার সব সরঞ্জাম প্রস্তুত করছেন তারা।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
© All rights reserved © 2023 digantabangla24.com