দিগন্ত ডেক্স : গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অসংখ্য ঘরবাড়ি। তবে কোনোটাতেই লোকজনের দেখা নেই। প্রায় ৩০০ বছর ধরে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে কুলধারা!
লোকমুখে প্রচলিত, এক রাতেই জনশূন্য হয়ে গিয়েছিল রাজস্থানের জনবহুল এই গ্রামটি। অনেকের দাবি, জনমানবহীন কুলধারায় ঘুরে বেড়ায় অতৃপ্ত আত্মা! সেখানে বসতি গড়ার চেষ্টা করলেও নানা ভৌতিক কাণ্ডকারখানার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনও দাবি স্থানীয়দের। মরুরাজ্যে সোনার কেল্লার শহর জয়সলমের থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার পশ্চিমে এগোলেই দেখা মেলে কুলধারার। এককালে তা পালীবাল ব্রাহ্মণদের বসতি বলে পরিচিত ছিল।
কুলধারায় দেখা মেলে না কোনো মানুষের। তবে জায়গাটি যাতে বেহাত হয়ে না যায়, সে বন্দোবস্তও করেছে সরকার। ইদানীং তা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর অধীনে রয়েছে। এক সময় অনেক জমজমাট ছিল কুলধারা। কেন এ হাল হল গ্রামটির? এ নিয়ে নানা মুনির নানা মত। অনেকের মতে, রাজরাজড়ার যুগে জয়সলমেরের প্রধানমন্ত্রী সালিম সিংহের কুনজর পড়েছিল গ্রামপ্রধানের মেয়ের দিকে। জোর করে তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন সালিম। সে জন্য গ্রামবাসীদের হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।
সালিম নাকি যা চাইতেন তা যে কোন মূল্যে নিজের করে নিতেন। জনশ্রুতি আছে, গ্রামপ্রধানের মেয়েকে তার হাতে তুলে না দিলে ফল ভাল হবে না বলে সতর্কও করেন তিনি। এর অন্যথা হলে গ্রামবাসীদের খাজনা বাড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দিয়েছিলেন।
বিপদ বুঝে তড়িঘড়ি ৮৫টি গ্রামের পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পালীবাল ব্রাহ্মণেরা। সেখানেই নাকি সিদ্ধান্ত হয়, গ্রামপ্রধানের মেয়েকে সালিমের থেকে বাঁচাতে রাতারাতি গ্রাম ছেড়ে পালাবেন বাসিন্দারা। তা-ই করেছিল কুলধারা।
এক রাতেই ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল গ্রাম। এখানে ওখানে কয়েকটি গাছ ছাড়া প্রাণের কোন চিহ্ন নেই এ গ্রামে। তবে এখানে কৌতূহলী পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।