দুর্গাপুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : জেলার দুর্গাপুর উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের জাঙ্গালিয়াকান্দা গ্রামের আব্দুল বাতেন এর বসত বাড়ীতে প্রতিহিংসার জেরে আগুন ধড়িয়ে বসত ঘর সহ মালামাল পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি চিহ্নিত চক্রের বিরুদ্ধে। গত সোমবার (২৩মার্চ) মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে গিয়ে জানাযায় ঐ গ্রামের আব্দুল বাতেন এর বাড়ীর দক্ষিন ভিটির ১৪ হাত লম্বা ৮ হাত প্রস্থ ছনের ছাউনি দুচালা বসতঘর ও ভিতরে থাকা আসবাবপত্র সহ পুড়েছাই হয়ে যায়। একই ভিটিতে থাকা ১০ হাত লম্বা ৭ হাত প্রস্থ আরেকটি ছনের ঘরে থাকা হাঁস-মুরগীসহ ঐ ঘরটিও পুড়ে ছাই করে দেয়া হয়। বাড়ীর মালিক আব্দুল বাতেন এর স্ত্রী সাজেদা আক্তার এ প্রতিনিধিকে জানান, তাঁর স্বামী বাড়ীতে অবস্থান করেননা নারায়নগঞ্জে রিক্সা শ্রমিকের কাজ করে এই সুযোগে একই গ্রামের আঃ ছাত্তারের পুত্র নারী লোভী লম্পট কুদ্দুছ মিয়া (৩০) দীর্ঘ সময় ধরে তাকে ত্যাক্ত-বিরক্ত করে আসছিলো, মাঝেমধ্যে তাকে কু-প্রস্তাব দিতো। সাজেদা কোনক্রমেই ঐ প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় বাড়ীর সুপারী গাছের চাড়া, লাউগাছ সহ বিভিন্ন সবজি গাছের ক্ষতি সাধন করতে থাকে লম্পট কুদ্দুছ মিয়া। বেশ কিছুদিন আগে খরের ছানাতে আগুনদিয়ে অন্তত: ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। এর পরবর্তী সময়ে আবারো আমাদের ছাগল রাখার ঘরে আগুন ধড়িয়ে দিলে সকলের সহায়তায় প্রানে রক্ষা পায় ৭টি ছাগল। এসব ঘটনায় মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রায় ৬মাস আগে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল আলী, সাবেক মেম্বার জাহের আলী, জাঙ্গালিয়াকান্দা সরঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইদ্রিস আলী ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক তাজ উদ্দিনসহ অসংখ্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে এক গ্রাম্য সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে কুদ্দুছ মিয়া এ সকল কর্মকান্ড ঘটিয়েছে বলে প্রমানিত হয়। দরবারকারীরা কুদ্দুছ মিয়াকে সতর্ক করেন, পরবর্তী এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে তা কুদ্দুসের উপরই বর্তাবে। দীর্ঘদিন চুপ থাকার পর গত ২৩ মার্চ ২০২০ মধ্যরাতে আবারো আমাদের ২টি ঘর মালামাল সহ পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়।
ওই গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে বারেক ও মান্নান বলেন তারা বালুচরে শ্রমিকের কাজ শেষে বাড়ী ফেরার সময় রাত অনুমান সারে ১২টার দিকে আব্দুল বাতেন এর বাড়ীর দিক থেকে কুদ্দুছ মিয়া ও অপরিচিত অন্য এক জনকে দৌড়াইয়া যাইতে দেখেছেন। আব্দুল বাতেন এর স্ত্রী সাজেদা আক্তার আরও বলেন, গত ২০ মার্চ শুক্রবার রাত অনুমান ১১টার দিকে লম্পট কুদ্দুছ মিয়া তার বসত ঘরের দরজা ধাক্কাধাক্কি করে এবং দরজা খুলতে বলে। সে ভয়ভিতিতে রাতকাটিয়ে পরদিন তার আত্নীয় স্বজননের সাথে বিষয়টি খুলে বলে। সাজেদা খাতুনের স্পষ্ট ধারণা যে ঐ লম্পট কুদ্দুছ মিয়াই সঙ্গীয় লোকসহ তারবাড়ীঘর পুড়িয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে এস আই আসাদুজ্জামান আসাদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, অভিযোগটি এখনো এফআইআর হয়নি বলে জানান ক্ষতিগ্রস্তরা। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্টু বিচার চান সাজেদা আক্তার ও তার স্বামী আব্দুল বাতেন। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আঃ মতিন মোতালেব বলেন, অভিযোগকারী সাজেদাকে দীর্ঘদিনধরে কুদ্দুছ মিয়া অত্যাচার নীপিরণ সহ্য করে আসছে। তবে সর্বশেষ আগুন দেওয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি। সাজেদা গংদের ধারণা কুদ্দুছ মিয়াই আগুন দিয়ে তাদের ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দিয়েছে, এ বিষয়ে দারোগার সাথেও আমার কথা হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই।