দুগার্পুর(নেত্রকোনা)প্রতিনিধি : নেত্রকোনাার দুগার্পুর-কলমাকান্দা দুই উপজেলার যোগাযোগের একটি মাত্র সড়ক। প্রতিদিন দুই উপজেলার হাজারো মানুষ, যানবাহন থেকে শুরু করে এম্বুলেন্স সহ সকল কিছুই যাতায়াত করছে এই সড়ক দিয়ে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে যাত্রী চলাচল বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন খারাপ হতে থাকে সকড়টি। এরই লক্ষে এলজিইডির আওতায় দুর্গাপুর-কলমাকান্দা পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়কটি নতুন করে সংস্কারের জন্য মোট তিন প্যাকেজে সাড়ে ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। যা ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট থেকে শুরু করে মে ২০১৯ এর দিকে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা শেষ করা হয়নি।
এ নিয়ে সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, দুর্গাপুর প্রেসক্লাব মোড় থেকে কলমাকান্দা পর্যন্ত প্রায় ২৫কি.মি রাস্তার কিছু অংশে কাজ শেষ হলেও অধিকাংশ রাস্তা ম্যাকাডম করে ফেলে রাখায় বৃষ্টিতে ওই রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত ও খানা খন্দের। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। দুটি উপজেলার যোগাযোগের মাধ্যম একটি মাত্র রাস্তা এ অবস্থায় পড়ে থাকায় ওই এলাকার ঘর মুখো মানুষের ভোগান্তি চরম আকারে ধারণ করেছে। ঠিকাদারদের চরম গাফিলতি ও সড়ক সংস্কারের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী দপ্তরের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার জন্যই এমনটি ঘটছে বলে জানান স্থানীয়রা জানান।
রাস্তার কাজ ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরু করেন। এর মাঝে দুগার্পুর-নাজিরপুর পর্যন্ত ১০ কি.মি একটি প্যাকেজ ও নাজিরপুর-কলমাকান্দা বাজার পর্যন্ত ১৫ কি.মি বাকী দুইটি প্যাকেজের কাজ ধরা হয়। যা চলতি বছরের ৬ই মে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের চেয়েও বেশ কয়েক মাস পার হয়ে গেলেও এখনো সড়কের বেশ কিছু অংশের কাজ বাকী রেখেছে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজের ফাঁকে ফাঁকে নি¤œ মানের ইট দিয়ে ম্যাকাডম করে ফেলে রাখায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে তৈরি হয় ছোট বড় অসংখ্যা খানাখন্দের, ফলে প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। রাস্তার আশ-পাশের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও পড়েছে এর প্রভাব। রাস্তার বেহাল দশার কারনে অসুস্থ্য রোগি সহ কোন লোকই বাহিরে যেতে পারছেনা। দুর্গাপুর থেকে কলমাকান্দা মাত্র ২৫ কি.মি. এ সড়ক পাড়ি দিতে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ও দ্বিগুন ভাড়া পড়িশোধে গন্তব্যে পৌছতে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। এ নিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এর সাথে যোগাযোগ করা হলে, কোন কর্মকতাই কথা বলতে রাজি হয়নি।
দুগার্পুরের অটো চালক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘‘রাস্তার কথা কিতা কইতাম-কাইল বেইল্যার সময়ই আমার গাড়ি উইল্ডা গেছিলগা, আর দুই-একদিন দেকবাম, পরে মিছিল লইয়া টেউনু সাইবের বারাত যাইয়াম’’অয় রাস্তা ঠিক করবাইন, নাইলে আমরারে খাউন দিবাাইন’’। আগে সারদিনে ২ থেকে ৩টি টিভ দিতে পারতো সব অটো চালকগন বর্তমানে রাস্তা খারাপ থাকায় ১টির বেশি টিভ দেয়া যায় না। অত্র এলাকায় যারা অটো চালিয়ে সংসার নির্বাহ করছেন তাদের এখন মাথায় হাত। রাস্তা সংস্কার করা না হলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
উপজেলা এলজিইডি কর্মকতা আব্দুল আলীম লিটন বলেন, কাজটি গত মে ২০১৯ এর দিকে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অবহেলার দরুন কাজটি এখনো শেষ হয়নি। আমরা ওই প্রতিষ্ঠানের উপর বহু চাপ সৃষ্টি করার পরেও বিষটি তারা আমলে নেয়নি। এখন বষার্কাল, সড়কে একটু পানি জমলেই সৃষ্টি হয় খানাখন্দের। যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব করতে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগি করে তোলার জন্য সংস্কারের একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
রাস্তা নিয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা খানম এ প্রতিনিধি কে বলেন, রাস্তা খারাপ থাকার কারনে মাত্র ২৫কি.মি রাস্তা যেতে প্রায় ২ঘন্টা সময় লেগে যায়। রাস্তার কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেয়ার পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই প্রতিষ্ঠানকে ইতোমধ্যে নোটিশ দেয়াও হয়েছে। এর পরেও কোন কাজ না হলে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।