কামরুল হাসান অভি, রাবি থেকে: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এখন ডিজিটাল নিপীড়ন আইনে পরিণত হয়েছে। মানুষের বাক স্বাধীনতাকে পদদলিত করতে ফ্যাসিবাদীদের প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে এই কালো আইনটি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য একটি স্বার্থান্বেষী মহল সুপরিকল্পিতভাবে এই নৃশংস আইনটি প্রণয়ন করেছে।
সোমবার (৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
‘ছাত্র-শিক্ষক- অভিভাবক ঐক্য’ মে র ব্যানারে মানববন্ধনে লেখক মুসতাক হত্যাকারী হিসেবে রাষ্ট্রকে দায়ী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বাতিল চেয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
রাকসু আন্দোলন মে র সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তরের সঞ্চালনায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. বখতিয়ার আহমেদ বলেন, একজন সম্মানি ব্যক্তির সম্মান যদি আইন করে রক্ষা করতে হয় তাহলে তার সম্মানটা রইলো কোথায়। এই কালো আইন যে খুব তাড়াতাড়ি বাতিল হবে তা আমরা মনে করি না। কেননা এই সরকার অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতায় এসেছে। ক্ষমতার মসনদ টিকে রাখার জন্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে। তাই আমাদের উচিৎ আন্দোলন অব্যাহত রাখা।
আইনটিকে সংবিধান পরিপন্থী উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয় যে চেতনাকে ধারণ করে তা আজ ভূলুণ্ঠিত। মানুষের বাক-স্বাধীনতা আজ কারারুদ্ধ। দেশের সংবিধানের সম্পূর্ণ বিরোধী এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, সরকারকে অতি দ্রুত এই কালো আইন বাতিল করতে হবে। তা না হলে আমাদেরকে ফ্যাসিস্ট বিরোধী সর্বদলীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে বলেন তিনি।
এ সময় গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মামুন হায়দার বলেন, আমরা তীব্র নিন্দা জানাই সরকারের এমন নীতিবোধহীন কাজের জন্য। দেশের জনগণ যেন সত্য কথা না বলতে পারে সে জন্যই এই আইন তৈরি করা হয়েছে। ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে এই সরকার তার ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার পরিকল্পনা করছে।
মানববন্ধনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক ঐক্য মঞ্চের’ আহ্বায়ক ও ফোকলোর বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম কণক, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আসলাম উদ-দৌলা, এডভোকেট মুর্শিদ আলম, এডভোকেট হাসিব উদ্দিন, রিদম শাহারিয়া প্রমুখ।