সাজ্জাদল আলম শাওন, জামালপুর থেকে: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। গত ২৪ ঘন্টায় দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী সড়কের মন্ডলবাজার এলাকায় ২০০ মিটার সড়ক নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে দেওয়ানগঞ্জ সদরের সাথে উত্তর পশ্চিমের অন্তত ২০টি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ী সড়কটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়ক দিকে প্রতিদিন অটোরিক্সা, ভ্যানসহ শত শত যানবাহন চলাচল করে। গত বছর বন্যায় সড়টির ওই স্থানে ৩০০ মিটারে ভাঙন দেখা দেয়। সে সময় সড়কটি লম্বালম্বি বেশি অংশ নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বাকী অর্ধাংশে সড়কে খানাখন্দ ও গর্তেও সৃ্িষ্ট হয়। দেওয়ানগঞ্জ সদর থেকে উত্তর পশ্চিমের খোলাবাড়ী, হাজারীপাড়া, মন্নিয়ারচর, চরবাহাদুরাবাদ ও হরিচন্ডিসহ ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতের এক মাত্র সড়ক হওয়ায় এবং যাতায়াতের অন্য কোনো বিকল্প সড়ক না থাকায় আধভাঙা ও খানাখন্দে ভরা ওই ৩০০মিটার সড়কে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শতশত যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষকে চলাচল করতে হয়েছে। সড়কের ভাঙা অংশের উত্তর পশ্চিম পাশে ২০টি গ্রামের পাশাপাশি রয়েছে নৌথানা, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজার। সড়কটির ওই অংশ নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার জনে সংশ্লিষ্ট মহলে যোগাযোগ করেও ভাঙন রোধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা পাননি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
গত ২৪ ঘন্টায় সড়কের গত বছরের ৩০০ মিটার আধভাঙা অংশের উত্তর পাশে এবার নতুন করে ২০০ মিটার সড়ক ভাঙনের কবলে পড়ে নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে উত্তর পশ্চিমের ২০টি গ্রামের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদের পক্ষ থেকে মানুষজন ও হালকা যানবাহন পারাপারের জন্যে খেয়া নৌকা দেওয়া হয়েছে। তথাপীও উপজেলা জেলা সদরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে।
গত দুই বছর থেকে সড়কের ওই স্থানে ৩০০ মিটার ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের কবলে পড়লে গত বন্যায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তড়িঘড়ি করে সড়কের ওই ৩০০ মিটারে সিনথেটিক ও জিও ব্যাগে বালি ভর্তি করে নদীতে ফেলে এবং ড্রাম সীটের গার্ডওয়াল দিয়ে নদের ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করে। এতে সাময়িক ভাবে ভাঙন রোধ হয়। কিন্ত এবার নদের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে সড়কের ওই স্থানের উত্তর অংশে নতুন কওে ২০০ মিটারে ভাঙন ধরে। গতকাল সড়কটির ওই স্থানের ২০০ মিটার নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে ওই সড়কে ¯^াভাবিক চলাচল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আবারো দুর্ভোগে পড়ে উত্তরপশ্চিমের ২০টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ।
চিকাজানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেওয়ানগঞ্জ -খোলাবাড়ী সড়কটি অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এ সড়কে মন্ডলবাজার এলাকায় গত বছর ৩০০ মিটার অর্ধাংশ নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এবার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে উত্তরাংশে আরো ২০০ মিটার গত ২৪ ঘন্টায় নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন রোধের জন্যে বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট মহলে যোগাযোগ করা হলেও কোনো কাজ হয়নি। ওই সড়কটি রক্ষার জন্যে আমি আবারো সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ কামনা করছি।
জেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদিক বলেন, সড়ক মেরামতের আগে প্রয়োজন নদী শাসন ও ভাঙন রোধ করা। এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমš^য়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সাঈদ বলেন, বিষয়টি আমি আজকেই অবগত হয়েছি। ভাঙন রোধে জুরুরী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।