দিগন্ত ডেক্স : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য পাঁচ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করে জোরালো আন্তর্জাতিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের একটি ভার্চুয়াল গোলটেবিল আলোচনায় এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ প্রস্তাব দেন।
প্রধানমন্ত্রীর ৫টি সুপারিশের মধ্যে আছে-
প্রথম প্রস্তাবে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে পৃথিবীকে এবং নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য আমি রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অবশ্যই জোরালো আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উৎসাহিত করার পরামর্শ দেব।
দ্বিতীয় প্রস্তবনায় বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে হবে এবং সমস্ত প্যারিস প্রবিধান বাস্তবায়ন করতে হবে।
তৃতীয়ত প্রস্তবনায় বলেন, দুর্বল দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত তহবিল সরবরাহ করতে হবে।
চতুর্থ প্রস্তবনায় বলেন, দূষণকারী দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় প্রশমন ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের এনডিসি (জাতীয় নির্ধারিত অবদান) বাড়াতে হবে।
পঞ্চম প্রস্তবনায় বলেন, জলবায়ু শরণার্থীদের পুনর্বাসন একটি বৈশ্বিক দায়িত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগ জানানোয় জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, অভিযোজন এবং সহিষ্ণুতার বিষয়ে বিনিময় করার মতো কিছু ধারণা ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের রয়েছে।
বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে অ্যাডাপটেশন ও রেজিলেন্স বিষয়ে বাংলাদেশের কিছু ধারনা ও অভিজ্ঞতা আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও পানি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ন করেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলায় ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ৪ হাজার ২৯১টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৫২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করেছি এবং আমাদের ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ কারণেই আমরা ‘রিপ’ উদ্যোগে যোগ দিয়েছি। যার লক্ষ্য ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে এক বিলিয়ন মানুষকে দুর্যোগ থেকে নিরাপদ করা।
বাংলাদেশ সিভিএফের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সম্প্রতি ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপ্টেশনের আঞ্চলিক অফিস প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ৯০ মিনিট স্থায়ী এ গোলটেবিল বৈঠকে সূচনা ও সমাপনী বক্তব্য রাখেন, যেখানে সারাবিশ্বের সরকারি, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজের প্রায় ২০ জন জলবায়ু নেতা অংশ নেন।